হাইকোর্টের গঠন: হাইকোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলি:


অঙ্গরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত হল হাইকোর্ট। ২১৪ নং ধারা অনুসারে প্রতি অঙ্গরাজ্যে হাইকোর্ট গঠনের ব্যবস্থা রয়েছে। সংবিধানের ২১৬ নং ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতির পরামর্শক্রমে ১ জন প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য কয়েকজন বিচারপতি নিয়ে হাইকোর্ট গঠিত হয়।

নিম্নে হাইকোর্টের বিচারপতিদের যোগ্যতা, নির্বাচন পদ্ধতি ও কার্যকাল সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-

হাইকোর্টের বিচারপতিদের যোগ্যতা:
হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার জন্য নিম্নে আলোচিত যোগ্যতাগুলি থাকা প্রয়োজন। যথা-
  •  বিচারপতিকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
  •  কোনো রাজ্যের হাইকোর্টে তাঁর অন্তত ১০ বছর অ্যাডভোকেটরূপে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  •  ভারত ভূখণ্ডের অন্তর্গত যে-কোনো আদালতে অন্তত ১০ বছর বিচারকরূপে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

হাইকোর্টের বিচারপতিদের নির্বাচন পদ্ধতি:
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারপতিগণ সংবিধানের ২১৭ নং ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হন।

হাইকোর্টের বিচারপতিদের কার্যকাল ও পদচ্যুতি:
হাইকোর্টের বিচারপতিগণ ৬২ বছর বয়স পর্যন্ত স্বপদে বহাল থাকেন।

হাইকোর্টের বিচারপতিদের বেতন ও ভাতা:
সংবিধানের ২২১ নং ধারা অনুযায়ী, হাইকোর্টের বিচারপতিগণ সংবিধানের দ্বিতীয় তপশিল অনুসারে বেতন ও ভাতা পান।

হাইকোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলি:
সংবিধানের ২২৫ নং ধারায় বলা হয়েছে, হাইকোর্টগুলি সংবিধান চালু হওয়ার অব্যবহিত পূর্বে যেসকল ক্ষমতার অধিকারী ছিল বর্তমানেও সেই ক্ষমতা ভোগ করে থাকে।

মূল এলাকা: হাইকোর্টের মূল এলাকায় মৌলিক অধিকার বলবৎকরণের মামলাগুলির বিচার হয়। রাজস্ব সংক্রান্ত বিরোধের বিচারও হাইকোর্টের মূল এলাকায় হয়ে থাকে। দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে কলকাতা, মুম্বাই (বোম্বাই) ও চেন্নাই (মাদ্রাজ) হাইকোর্টের মূল এলাকা হিসেবে স্বীকৃত।

আপিল এলাকা: প্রত্যেক রাজ্যের হাইকোর্টগুলি হল সেই রাজ্যের সর্বোচ্চ আপিল আদালত। দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় প্রকারমামলার আপিল নিম্নতম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা যায়।

লেখ জারির ক্ষমতা: রাজ্যের ভূখণ্ডের মধ্যে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব সংবিধান হাইকোর্টগুলির উপর ন্যস্ত করেছে। হাইকোর্ট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতি বন্দি-প্রত্যক্ষীকরণ, পরমাদেশ, প্রতিষেধ, অধিকারচ্ছা, উৎপ্রেষণ প্রভৃতি লেখ, নির্দেশ বা আদেশ জারি করতে পারে।

মামলা অধিগ্রহণের ক্ষমতা: সংবিধানের ২২৮ নং ধারা অনুসারে কোনো নিম্ন আদালতে চলা কোনো মামলার সঙ্গে সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত থাকলে হাইকোর্ট উক্ত মামলাটি নিজের হাতে তুলে নিয়ে বিচার করতে পারে।

তত্ত্বাবধানের ভূমিকা: রাজ্যের সকল আদালত ও ট্রাইবিউনালের উপর হাইকোর্টের প্রশাসনিক ও বিচার বিষয়ক তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা ন্যস্ত করা রয়েছে (২২৭ নং ধারা), অধস্তন আদালতগুলি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব হাইকোর্টের উপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

   উপরোক্ত হাইকোর্টের গঠন ও কার্যাবলি আলোচনা করে বলা যায়, এই আদালত রাজ্যের বিচারব্যবস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন for "হাইকোর্টের গঠন: হাইকোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলি:"