পরিবেশ বান্ধব শক্তি: সপ্তম শ্রেণীর পরিবেশ ও বিজ্ঞান:
১. স্টিম ইঞ্জিন চালাতে কোন্ শক্তির ব্যবহার করা হয়?
উঃ- তাপ শক্তির ব্যবহার।
২. কী উৎপাদনে তাপশক্তির ব্যবহার হয়?
উঃ- বিদ্যুৎ উৎপাদনে
৩. শক্তির প্রধান প্রাকৃতিক উৎস কী?
উঃ- মাটির তলায় থাকা জ্বালানির ভাণ্ডার।
৪. জীবাশ্ম জ্বালনি পুড়িয়ে কী তৈরি করা
হয়?
উঃ- বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়।
৫. বিদ্যুৎ কী থেকে তৈরি করা যায়?
উঃ- কয়লা পুড়িয়ে তৈরি করা যায়।
৬. কত সালে কোন্ মহাদেশে প্রথম
পেট্রোলিয়াম উৎপাদন শুরু হয়?
উঃ- ১৮৫৯ সালে আমেরিকা মহাদেশে মাটিতে ড্রিল করে
প্রথম পেট্রোলিয়াম উৎপাদন শুরু হয়।
৭. কারা নিজেদের খাদ্য তৈরি করে?
উঃ- সবুজ উদ্ভিদ নিজেদের খাদ্য তৈরি করে।
৮. খাদ্য উৎপাদনে কোন্ প্রাকৃতিক শক্তি
উদ্ভিদ কাজে লাগায়?
উঃ- সৌরশক্তি।
৯. উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহে কোন্ শক্তি
পরিবর্তিত হয়ে আবদ্ধ হয়?
উঃ- সৌরশক্তি।
১০. সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে কার
মাধ্যমে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়?
উঃ- সৌরকোশ।
১১. সৌর প্যানেল কত বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে?
উঃ- ১০-১৫ বছর।
১২. সৌরশক্তির ব্যবহার লেখো।
উঃ- সোলার লাইট, সোলার কুকার, সোলার
ক্যাপ।
১৩. আমাদের রাজ্যে কোথায় বড়ো বড়ো
বায়ুকল আছে?
উঃ- বকখালিতে।
১৪. জৈব গ্যাস কী?
উঃ- জৈব বর্জ্য বা জৈব উৎসজাত পাওয়া
জিনিস থেকে যা উৎপন্ন হয় তাকে জৈব গ্যাস বলে।
১৫. একটি অপ্রচলিত কিন্তু পরিবেশবান্ধব
শক্তির উৎস কী?
উঃ- জৈব বর্জ্য বা জৈব উৎসজাত জিনিষ থেকে
উৎপন্ন হয় জৈব গ্যাস।
১৬. পোলট্রি পাখিদের মল থেকে কী তৈরি হয়?
উঃ- জৈব সার তৈরি হয়।
১৭. কতকগুলি অপ্রচলিত শক্তি উদাহরণ দাও।
উঃ- জোয়ার ভাটার শক্তি, মাটির নীচের তাপশক্তি ইত্যাদি।
১৮. গৃহপালিত পশু-পাখির মন থেকে কীভাবে
তাপ পাওয়া যায়?
উঃ- গৃহপালিত পশু-পাখির মল বড়ো গর্তে পচালে তার
থেকে গ্যাস উৎপন্ন হবে, সেই গ্যাস দহন করে তাপ পাওয়া চায়।
১৯. জনসংখ্যার সঙ্গে কোন কোন বিষয় সরাসরি
যুক্ত?
উঃ- (ক) বেশি পণ্য উৎপাদন, (খ) বাসস্থান নির্মাণ, (গ) পরিবহণ ব্যবস্থা, (ঘ) বস্ত্র উৎপাদন।
২০. পুরানো দিনে গ্রামের মানুষের
জীবনযাত্রা কীরূপ?
উঃ- (ক) মেঠো রাস্তা, (খ) নৌকা বা গোরুর গাড়িতে যাতায়াত, (গ) ঘড়ের ছাউনি দেওয়া বাড়ি, (ঘ) সাধারণ জীবন যাপন ইত্যাদি।
২১. পরিবেশবান্ধব শক্তি কী?
উঃ- অন্য কোনো শক্তির উৎসের সন্ধান করতে হবে এবং
যা পরিবেশে কম ক্ষতি করবে তাকে পরিবেশ বান্ধব শক্তি বলে। এই শক্তির উৎস হল
সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈবশক্তি
ও জোয়ার ভাটার শক্তি।
২২. সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা কোন্
কোন্ শক্তি পাই?
উঃ- (ক) সোলার বাইক, (খ) সোলার ওয়াটার হিটার, (গ) সোলার সিগন্যাল, (ঘ) আলো, ফ্যান চালানো ইত্যাদি।
২৩. বায়ুপ্রবাহের শক্তি ব্যবহার করলে কী
কী সুবিধা হবে?
উঃ- বায়ুপ্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে
বড়ো মাপের বিদ্যুৎ শক্তি তৈরি করা সম্ভব।
(ক) একবার বায়ুকল বসালে তা দীর্ঘদিন চলবে।
(খ) বায়ুর কোনো অভাব নেই।
(গ) যে সমস্ত জায়গায় দূর থেকে তার সংযোগ করে
বিদ্যুৎ আনা সম্ভব নয় সেখানে এটির ব্যবহার করা যেতে পারে।
২৪. জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর প্রভাব
থেকে বাঁচতে গেলে আমরা কী করব?
উঃ- জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে
বাঁচতে এই জ্বালানির, মাত্রাতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার বন্ধ করা।
পরিবেশবান্ধব ও বিকল্প শক্তি উৎসগুলি থেকে শক্তি সংগ্রহ করা এবং তার ব্যবহার
বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া।
২৫. কয়লা বা খনিজ তেলের আয়ু কীভাবে দীর্ঘায়িত
করা যায়?
উঃ- উপযুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা বা খনিজ তেল থেকে আনা
অন্যান্য কম শুষ্ক জ্বালানি তৈরি করে কয়লা বা খনিজ তেলের আয়ু দীর্ঘায়িত করা
যেতে পারে। যেমন—রান্নার গ্যাস বা L.P.G
২৬. জীবাশ্ম জ্বালানি কাকে বলে?
উঃ- প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে ব্যাপক
সংখ্যায় উদ্ভিদ ও প্রাণী লক্ষ লক্ষ বছর ধরে। মাটির নীচে চাপা পড়ে নানা ধরনের জৈব
বা অজৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া শিলাস্তরে চাপা, ভূ-গর্ভস্থ
তাপ ও বায়ুর অভাব ইত্যাদি কারণে জীবাশ্ম পরিণত হয় এবং এ থেকে কার্বন সমৃদ্ধ যে
জ্বালানি উৎপন্ন হয় তাকে জীবাশ্ম জ্বালানি বলে।
২৭. কয়লা বা পেট্রোলিয়াম কীভাবে উৎপন্ন
হয়?
উঃ- উদ্ভিদ বা প্রাণীর মৃত্যুর পর তাদের
দেহাবশেষ কোটি কোটি বছর মাটির তলার তাপ ও চাপে থাকতে থাকতে পরিবর্তিত হয়ে কয়লা
বা পেট্রোলিয়াম উৎপন্ন হয়।
২৮. ভেবে দেখো ১০০-১৫০ বছর আগে লোকসংখ্যাই
বা কত ছিল? তাহলে পরিবহন, বিদ্যুতের ব্যবহার যন্ত্রের ব্যবহার কত কম ছিল, আর এখন?
উঃ- ১৫০ বছর আগে পৃথিবীর আনুমানিক
লোকসংখ্যা ছিল ১০০ কোটি। আর এখন প্রায় ৬০০ কোটি, তার
স্বাভাবিকভাবেই পরিবহন ব্যবহার বহুগুণ বেড়েছে।
২৯.সৌরকোশ কী কাজে লাগে? সৌরশক্তির দুটি ব্যবহার লেখো।
উঃ- সৌরকোশ দ্বারা সৌরশক্তি তড়িৎ শক্তিতে
রূপান্তরিত হয়ে থাকে।
(ক) জল গরম করার জন্য সৌরতাপ যন্ত্রের ব্যবহার
হয়।
(খ) রান্নার কাজে সৌর কুকার ব্যবহার হয়।
৩০. জ্বালানি বলতে কী বোঝ? অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কোন কোন্ সঞ্চয় ভাঙার
নিঃশেষিত হচ্ছে?
উঃ- যে সব বস্তু দহনের ফলে প্রচুর পরিমাণ
তাপশক্তি উৎপন্ন হয়ে থাকে তাকে জ্বালানি বলা হয়। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে খনিজ
তেল, কয়লা, প্রাকৃতিক
গ্যাস ইত্যাদির সঞ্চয় ভাঙার শেষ হতে চলেছে।
৩১. ক্ষয়িষ্ণু শক্তি কাকে বলে? উদাহরণ দাও। প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল উপাদানগুলি কী
কী?
উঃ- যে সব শক্তির পরিমাণ সীমিত এবং শক্তির
উৎস শেষ হলে পুনরায় উৎপাদন করা যায় না, তাকে
ক্ষয়িষ্ণু শক্তি বলে। যেমন পেট্রোল, কয়লা।
প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল উপাদান হল– মিথেন (৬১%), ইথেন (২৫%), প্রোপেন, বিউটেন এবং অল্প হাইড্রোকার্বন ইত্যাদি।
৩২. টীকা লেখো।
(খ) সোলার কুকার, (খ) জোয়ার ভাটা শক্তি, (গ) সোলার ড্রায়ার, (ঘ) সোলার লণ্ঠন।
উঃ- (ক) সোলার কুকার: সৌরশক্তি চালিত কুকারগুলির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
১৫০°C। ভিতরের রান্নার পাত্রের তাপমাত্রা গড়ে ১০০°C হয়। উন্নতা বেশি না হওয়ার জন্য খাদ্যের গুণগত
মান বজায় থাকে।
(খ) জোয়ার ভাটা
শক্তি: জোয়ার ও ভাটার
প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে যে শক্তি সংগ্রহ করা হয় তাকে জোয়ার ভাটা শক্তি বলে। নদী
বা সমুদ্রের জোয়ার ভাটার সময় জলস্তরের ওঠানামাকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ও
ডায়নামোকে পরিচালিত করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। সামুদ্রিক দ্বীপ ও তার
উপকূলবর্তী অঞ্চলে এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা সম্ভব।
(গ) সোলার ড্রায়ার: এই বিশেষ যন্ত্রের দ্বারা শস্যাগারের ভিতর
উত্তপ্ত বায়ু প্রবাহ ঘটিয়ে যার তাপমাত্রা (৪০°C -১০০°C) শস্যকে শুষ্ক করা হয়।
(ঘ) সোলার লণ্ঠন: বিদ্যুৎচালিত এই লণ্ঠনগুলির সঙ্গে একটি প্যানেল
থাকে যার মাধ্যমে সৌরশক্তির দ্বারা ব্যাটারিটিকে রিচার্জ করা হয়। এই যন্ত্রের
ভিতর ব্যাটারিটি সম্পূর্ণ ডিসচার্জড বা অধিক চার্জড হয় না।
৩৩. পেট্রো-উদ্ভিদ বলতে কী বোঝ? প্রোডিউসার গ্যাস কাকে বলে?
উঃ- ইউফরবিয়েসি, ইউরিক্যাসি
গোত্রের তরল হাইড্রোকার্বন উৎপাদনকারী উদ্ভিদগুলিকে পেট্রো-উদ্ভিদ বলে। যেমন—জাট্রোকা। কার্বন মনোক্সাইড ও নাইট্রোজেন গ্যাসের
মিশ্রণকে প্রোডিউসার গ্যাস বলা হয়। এটি কৃত্রিম উপায়ে উৎপন্ন একটি জ্বালানি
গ্যাসও বটে।
৩৪. সৌরকোশ কীভাবে ব্যবহার করা যায়?
উঃ- দিনের বেলায় যে সূর্যের আলো পৃথিবীতে অবিরাম
এসে পৌঁছায় তাকে কাজে লাগিয়েই এই সৌরকোশে বিদ্যুৎ তৈরি হয়। এরপর সৌর প্যানেলের
সঙ্গে যুক্ত ব্যাটারিতে তা সঞ্জয় করা যায়। রাতের বেলা বা কম সূর্যের আলোতেও এর
ব্যবহার করা যায়।
৩৫. সৌর প্যানেল থেকে পরিবেশের কী কোনো
ক্ষতি হতে পারে?
উঃ- না তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। এইসব সৌর প্যানেল
১০-১৫ বছর ঠিক থাকে। তাছাড়া এই প্যানেলগুলি পুনর্নবীকরণ করে আবার ব্যবহারযোগ্য
করে তোলা যায়। তবে সৌরকোশ তৈরি করার শুরুতে কিছুটা প্রচলিত শক্তি ব্যয় করতে হয়।
৩৬. বিভিন্ন শক্তি খরচের জন্য কি
কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে? এখনকার শিল্পগুলি কী
হবে?
উঃ- বিভিন্ন শক্তির অতিরিক্ত খরচের জন্য
কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেলে কারখানা নির্ভর শিল্পগুলিও বন্ধ হবে। ফলে সভ্যতা ধ্বংসের
পথে এগিয়ে যাবে। তাই এখনকার শিল্পগুলি বাঁচাতেও সমগ্র সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে
বিকল্প শক্তির উৎসের সন্ধান করতে হবে। যা এই ক্রমবর্ধমান শক্তি চাহিদা মেটাতে সক্ষম
হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন for "পরিবেশ বান্ধব শক্তি: সপ্তম শ্রেণীর পরিবেশ ও বিজ্ঞান:"