জাতীয় জনসমাজ কাকে বলে?


জাতীয় জনসমাজ কথাটি এসেছে ইংরেজি শব্দ ন্যাশনালিটি (Nationality) থেকে। এটি হল জনসমাজ এবং জাতির মধ্যবর্তী পর্যায়। জাতীয় জনসমাজ জনসমাজেরই একটি উন্নত স্তর। যখন কোনো জনসমষ্টির – মধ্যে গভীর স্বাতন্ত্র্যবোধ দেখা দেয় এবং সেই জনগোষ্ঠী, অন্যান্য জনগোষ্ঠী থেকে নিজেদের সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বলে মনে করে, তখন তাকে জাতীয় জনসমাজ বলে। বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী জাতীয় জনসমাজের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন, যা নিম্নে আলোচনা করা হল-

গার্নার: গার্নার-এর মতে, কুল বা বংশগত অথবা অন্যান্য ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ জনসমষ্টিই হল জাতীয় জনসমাজ।

লর্ড ব্রাইস: লর্ড ব্রাইস জাতীয় জনসমাজকে ব্যাখ্যা করে বলেছেন, “জাতীয় জনসমাজ হল ভাষা, সাহিত্য, ভাবধারা, রীতিনীতি প্রভৃতির দ্বারা যুগ-যুগান্তরের বন্ধনে আবদ্ধ এমন একটি জনসমাজ যারা অনুরূপভাবে ঐক্যবদ্ধ অপরাপর জনসমষ্টি থেকে নিজেদেরকে পৃথক বলে মনে করে”।

ল্যাস্কি: ল্যাস্কি-র ভাষায় বলা যায়, সীমিত ও পরিমাণগত উপাদানের উপর ভিত্তি করে যেহেতু জাতীয় জনসমাজকে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়, তাই জাতীয় জনসমাজের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা প্রদান করাও সম্ভব নয়।

জিমার্ন: জিমার্ন-এর মতে, জাতীয় জনসমাজ হল এমন একটি ধারণা যা ধর্মের ন্যায় আধ্যাত্মিক আবার চিন্তা, অনুভূতি ও জীবনধারণের জন্য স্বাভাবিক।

কোকার: কোকার জাতীয় জনসমাজকে মূলত অতীত ইতিহাসের অভিজ্ঞতা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি ফল রূপে বর্ণনা করেছেন।

মূল্যায়ন: তাই উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত জনসমষ্টিকে জাতীয় জনসমাজ বলে আখ্যায়িত করা যায়, যারা জাতিগত, ধর্মগত, বংশগত, ভাষাগত, সংস্কৃতিগতভাবে অভিন্ন হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক চেতনার দিক থেকেও সমভাবে ঐক্যবদ্ধ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন for "জাতীয় জনসমাজ কাকে বলে? "